ইসলাম ধর্ম

ঘুমানোর দোয়া, রাতে ঘুমানোর আগে যে আমল করবেন

ঘুমানোর দোয়া, রাতে ঘুমানোর আগে যে আমল করবেন

আমাদের মাঝে অনেকেই আছে যারা কি না রাতে খাবার খাওয়া শেষ করেই ঘুমিয়ে পড়েন, আবার এমন ও অনেক লোক আছে যারা রাতের খাবার শেষ করে মহান আল্লাহ তায়ালার সন্তুষ্টি লাভের জন্য বিভিন্ন আমাল এবং দোয়া করে থাকে।

আমাদের প্রিয় নবী রাসুল (সাঃ) ঘুমানোর আগে কোন দোয়া এবং যে আমল করতেন তা আমাদের জানা উচিৎ।

চলুন আমরা সবাই জেনে নেই রাতে ঘুমানোর দোয়া এবং ঘুমানোর আগে যে আমল গুলো করতে হয়।

মহান আল্লাহ তায়ালা বলেন, তোমাদের জন্য ঘুম বা নিদ্রাকে করেছি ক্লান্তি দূরকারী। (সূরা আন-নাবা, আয়াত-৯)।

ঘুম মানুষের মস্তিষ্কজনিত সকল প্রকার চিন্তা-ভাবনাকে দূর করে মস্তিষ্ক ও অন্তরের সকল প্রকার স্বস্তি ও শান্তি দান করে।

নবী করিম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেনঃ 

  • ঘুমানোর আগে বিছানাটা ঝেড়ে নেওয়া। 
  • ঘুমানোর সময় ডান পাশ্বের ওপর শোয়া।
  • অতঃপর দোয়া পাঠ করা। (নিচের দোয়া)

ঘুমানোর দোয়া বাংলা উচ্চারণঃ

আল্লাহুম্মা আস্লামতু নাফ্সী ইলাইকা ওয়া ওয়াজ্জাহ্তু ওয়াজহী ইলাইকা ওয়া ফাউওয়ায্তু আমরী ইলাইকা ওয়ালজা’তু যাহরী ইলাইকা রাগ্বাতা ওয়া রাহবাতান ইলাইকা লা মালজা’আ মিনকা ওয়া লা মানজা’আ মিনকা ইল্লা ইলাইকা আ-মানতু বিকাতা-বিকা। আল্লাজি আনঝালতা ওয়া বি নাবিয়্যিকাল্লাযী আরসালাত।’

ঘুমানোর দোয়া বাংলা অর্থঃ

হে আল্লাহ! আমি নিজেকে তোমাতে সমর্পণ করলাম, তোমার দিকে মুখ ফিরালাম, আমার কাজ তোমার প্রতি ন্যস্ত করলাম এবং তোমার প্রতি ভয় ও আগ্রহ নিয়ে তোমার আশ্রয় গ্রহণ করলাম। তুমি ছাড়া কোনো আশ্রয়স্থল ও নাজাতের স্থান নেই। তোমার প্রেরিত কুরআনের প্রতি ঈমান আনলাম এবং তোমার প্রেরিত রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর প্রতি ঈমান আনলাম।’ (সহীহ বুখারী ও মুসলিম)।

আরও পড়ুনঃ  ঈদের চাঁদ দেখার দোয়া | Eider chad dekhar dua

ঘুমানোর দোয়ার ফজিলতঃ

রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এক ব্যক্তিকে বললেন, হে অমুক, যখন তুমি বিছানায় ঘুমাতে যাবে তখন নামাজের ন্যয় অযু করবে। তারপর তোমার ডান পার্শ্বের উপরে শুবে এবং উক্ত দোয়া পাঠ করবে।

তারপর আবার রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বললেন, যদি তুমি সেই রাতে মৃত্যু বরণ করো তবে তুমি ইসলামের উপর মৃত্যু বরণ করবে আর যদি তুমি ভোরে উঠো তবে তুমি কল্যাণের সঙ্গে উঠবে।

রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম যখন রাতে শয্যা গ্রহণ করতেন তখন বলতেন-

উচ্চারণঃ আল্লাহুম্মা বিসমিকা আ’মু-তু ওয়া আ’হইয়া।

অর্থঃ হে আল্লাহ! তোমারই নামে আমি মৃত্যুবরণ করছি এবং তোমারই অনুগ্রহে জীবিত হব (সহীহ বুখারী)।

রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম শোয়ার সময় ডান হাত গালের নীচে রেখে নিম্নের দোয়াটি পড়তেনঃ  

উচ্চারণঃ আল্লাহুম্মা ক্বিনী আ’যা-বাকা ইয়াওমা তাব’আছু ই’বা-দাকা।

অর্থঃ হে আল্লাহ! তুমি আমাকে তোমার আযাব হতে রক্ষা কর, যেদিন তুমি তোমার বান্দাদেরকে কবর হতে ওঠাবে (জামে আত-তিরমিজি)।

রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, যে ব্যক্তি রাতে ঘুমানোর সময় সূরা বাক্বারার শেষ দু’টি আয়াত তেলাওয়াত করবে, তার জন্য তা যথেষ্ট হবে (সহীহ বুখারী ও মুসলিম)।

এছাড়াও রাতে ঘুমাবার সময় কোনো বান্দা আয়াতুল কুসরি পাঠ করে তবে আল্লাহর পক্ষ থেকে একজন পাহারাদার নিযুক্ত করা হয় এবং শয়তান তার নিকট আসতে পারে না এবং (তার কোন মালের অনিষ্ট করতে পারে না (সহীহ বুখারী)।

আরও পড়ুনঃ  শবে বরাতের ফজিলত ও আমল

রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম রাতে ঘুমানোর সময় সূরা ইখলাছ ,সূরা ফালাক্ব, সূরা নাস পড়তেন। (সহীহ বুখারী ও মুসলিম)।

জামে আত-তিরজিমি শরীফে এসেছে, রাসুল (সাঃ) হযরত ফাতেমা (রাদিঃ) রাতে শোয়ার সময় ৩৩ বার সুবহান আল্লাহ, ৩৩ বার আলহামদুল্লিহা এবং ৩৪ বার আল্লাহু আকবার পাঠ করতে বলেছিলেন।

যুগের পাতা

যুগের পাতা একটি জ্ঞানভিত্তিক প্ল্যাটফর্ম যেখানে ইসলাম, স্বাস্থ্য, প্রযুক্তি, খেলাধুলা, বিশ্বতথ্য ও বিজ্ঞান নিয়ে সাম্প্রতিক ও প্রাসঙ্গিক আর্টিকেল প্রকাশিত হয়। আমরা চেষ্টা করি, আপনাদেরকে সঠিক ও প্রাসঙ্গিক তথ্য দিয়ে সবসময় আপডেট রাখতে।

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।

Back to top button

অ্যাডব্লকার ডিটেক্ট হয়েছে!

মনে হচ্ছে আপনি অ্যাড ব্লকার ব্যবহার করছেন। আমাদের সাইট ভিজিট করার জন্য আপনাকে অ্যাড ব্লকার বন্ধ করতে হবে। যদি অ্যাডব্লকার ব্যবহার না করেন, তাহলে পেজটি রিফ্রেশ করুন।