পাওয়ার ব্যাংক কেনার আগে যেসব বিষয়ে নজর দেওয়া প্রয়োজন
প্রযুক্তি নির্ভর এই সময়ে আমরা চারপাশ থেকে নানাবিধ গ্যাজেটে আবৃত রয়েছি। এইসব গ্যাজেটের দৈনন্দিন ব্যবহারে ব্যাটারি পারফর্মেন্স একটি গুরুত্বপূর্ণ ইস্যু।
ধরুন আপনি ট্যুরে খুব গুরুত্বপূর্ন কাজের দায়িত্বে আছেন আর আপনার ফোনের ব্যাটারি শেষ, এখন উপায়? এই মুহুর্তে আপনার প্রয়োজন একটি দুর্দান্ত ব্যাটারি সাপোর্ট দিবে এমন একটি পাওয়ার ব্যাংকের।
পাওয়ার ব্যাংক হল একটি ছোট আকৃতির পোর্টেবল ডিভাইস যা একটি বিশেষ সার্কিট ব্যবহার করে প্রচুর পরিমানে চার্জ জমা করে রাখে যেখান থেকে পরবর্তিতে আপনি অন্যান্য ডিভাইসকে রিচার্জ করতে পারবেন। এককথায় পাওয়ার ব্যাংক হল এক প্রকারের বহনযোগ্য চার্জার।
পাওয়ার ব্যাংক কেনার সময় যেসব বিষয় গুলোর দিকে নজর দিতে হবে
এখন বাজারে বিভিন্ন ব্র্যান্ড এবং বিভিন্ন দামের পাওয়ার ব্যাংক পাওয়া যাচ্ছে আর তাদের কোয়ালিটি ও পার্ফরমেন্সেও পার্থক্য রয়েছে। আর তাই এই ডিভাইস কেনার আগে কিছুটা যাচাই বাছাই করা জরুরি হয়ে পড়েছে। আপনি যদি প্রথমবারের মত পাওয়ার ব্যাংক কিনতে চান তবে নিম্নলিখিত বিষয়গুলোর প্রতি নজর দেয়া জরুরি।
১। প্রথমেই ক্যাপাসিটি চেক করুন
বাজারে এখন ১৫০০ এমএএইচ (mAh) থেকে শুরু করে ২৫/৩০ হাজার এমএএইচ (mAh) পর্যন্ত ক্যাপাসিটির পাওয়ার ব্যাংক কিনতে পাওয়া যায়। আপনার জন্য কোন ক্যাপাসিটি উপযুক্ত হবে তা নির্ভর করবে আপনার ফোনের ব্যাটারি ক্যাপাসিটির উপর।
ধরে নিন আপনার ফোনের ব্যাটারি ক্যাপাসিটি ৩০০০ এমএএইচ তাহলে আপনি যদি মনে করেন ১২০০০ এমএএইচ ক্যাপাসিটির পাওয়ার ব্যাংক কিনলে তা থেকে তিনবার আপনার ফোন ফুল চার্জ করতে পারবেন তাহলে ভুল করবেন।
কারন পাওয়ার ব্যাংকটি যখন আপনার ডিভাইসকে চার্জ করবে তখন তার নিজের কিছু এনার্জি লস হবে। তাই পাওয়ার ব্যাংক কেনার সময় আপনার ফোনের ব্যাটারির কমপক্ষে দিগুনের চেয়ে কিছু বেশী ক্যাপাসিটির কেনা ভালো এতে আপনি অন্তত দুইবার ফুল চার্জ নিতে পারবেন।
২। প্রটেকশন এবং বহনযোগ্যতা দেখুন
আপনি যখন কোন ইলেক্ট্রনিক ডিভাইস ক্যারি করবেন তখন আপনার প্রটেকশনের বিষয়টাও গুরুত্বের সাথে বিবেচনা করতে হবে। একটি ভালো মানের পাওয়ার ব্যাংক বিশেষ কিছু প্রটেকশন দিতে পারে যেমন- সর্ট সার্কিট প্রটেকশন, অভার চার্জিং প্রটেকশন, অভার ভোল্টেজ প্রটেকশন, এবং অনেক বেশী গরম হয়ে যাওয়ার থেকে প্রটেকশন।
আপনার পছন্দের পাওয়ার ব্যাংকটি এই প্রটেকশনগুলো দিতে পারবে কিনা দেখুন। পাওয়ার ব্যাংকের আকার এবং ওজন যেন সহজে বহনযোগ্য হয় সেদিকেও খেয়াল রাখা জরুরি।
৩। পাওয়ার ব্যাংকের আউটপুট কারেন্ট
পাওয়ার ব্যাংকের আউটপুট কারেন্ট ২ এম্পেয়ার হলে ভালো হয়। কারন আপনার ফোন বা অন্যান্য ডিভাইস ১ এম্পেয়ার চার্জ নিতে না পারলেও ২ এম্পেয়ার আউটপুট এর পাওয়ার ব্যাংক কোন সমস্যা ছাড়াই ব্যবহার করতে পারবেন কারন একটি ভালো মানের পাওয়ার ব্যাংক আপনার ডিভাইসের চাহিদা অনুযায়ী এম্পেয়ারে চার্জ দিবে।
৪। পাওয়ার ব্যাংক ইনপুট কারেন্ট
বড় ক্যাপাসিটির পাওয়ার ব্যাংক চার্জ হতে অনেক ক্ষেত্রেই অধিক সময় নিয়ে থাকে। একটি ভালো মানের মিডিয়াম ক্যাপাসিটির পাওয়ার ব্যাংক গড়ে ৫.৫ ঘন্টা সময় নেয় ফুল চার্জ হতে। ক্যাপাসিটি বেশী হলে চার্জ হতেও বেশী সময় নিবে তাই পাওয়ার ব্যাংক কেনার আগে এর ইনপুট কারেন্ট দেখে নিতে হবে।
৫। ব্যাটারি টাইপ
বাজারে লিথিয়াম আয়ন এবং লিথিয়াম পলিমার এই দুই ধরনের ব্যাটারি পাওয়া যায়। লিথিয়াম আয়ন ব্যাটারি কিছুটা ভারী আর বড় আকৃতির আর লিথিয়াম পলিমার বেশ খানিকটা হালকা পাতলা হয়ে থাকে। লিথিয়াম পলিমার ব্যাটারির পাওয়ার ব্যাংক হালকা হলেও এর দাম কিছুটা বেশি।
৬। একাধিক আউটপুট পোর্ট
আজকাল অনেক পাওয়ার ব্যাংকেই একাধিক আউটপুট পোর্ট থাকে ফলে একসাথে একাধিক ডিভাইস একসাথে চার্জ করা যায়। তাই একাধিক আউটপুট পোর্ট আছে এমন পাওয়ার ব্যাংক কেনাই ভালো। তাহলে একই সাথে আপনি একাধিক ডিভাইস চার্জ করতে পারবেন।
এছাড়াও পাওয়ারব্যাংক কেনার সময় এর ওয়ারেন্টি, ক্যাবল, কুইক চার্জিং সুবিধা ইত্যাদিও বিবেচনা করা দরকার। সেই সাথে অরিজিনাল ব্র্যান্ড এবং দামের দিকটাও গুরুত্বের সাথে দেখতে হবে।
আশাকরি এবার আপনিও বাজারে অসংখ্য পাওয়ার ব্যাংকের মধ্য থেকে আপনার জন্য উপযুক্ত ও সেরা ডিভাইসটি খুঁজে নিতে পারবেন। ধন্যবাদ।